কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে এই পোস্টে আলোচনা করার চেষ্টা করব। যাদের মনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে নানা ধরনের কনফিউশন এবং সমস্যা রয়েছে তারা এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে অনেক ভালো ধারণা পেয়ে যাবেন।
এজন্য এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন এই পোস্টে আমি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা অসুবিধা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে কি কি উপকার হচ্ছে এবং কি কি ক্ষতি হতে পারে এবং ক্ষতি সম্মুখীন অনেক মানুষকে পড়তে হবে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা সমূহ
অটো মেশিন সিস্টেম তৈরিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সাহায্য করে এবং এটার কারণে কাজ দ্রুত এবং খুব সহজেই একই কাজ করা যায়।
- কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি: এর ব্যবহার করে যে কোন কাজ খুব সহজে সঠিকভাবে এবং কম সময়ের মধ্যেই করা যায়। একই কাজ বারবার করলে নির্ভুলভাবে করা যায়।
- খরচ সাশ্রয়: কোম্পানির কাজে নানা ধরনের এআই ব্যবহারের ফলে ফিজিক্যাল পরিশ্রমের পরিমাণ কমে যায় এবং কর্মীর সংখ্যা কমে গিয়ে কোম্পানির খরচ বাচে।
- ২৪/৭ সেবা প্রধান সম্ভব: এআই ব্যবহার করে দিনরাত ২৪ ঘন্টা সেবা প্রদান করা সম্ভব। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের চ্যাট বোর্ড ব্যবহার করে দিনরাত সবসময় গ্রাহকের নানা ধরনের চাহিদা পূরণ করা।
- মানুষের ভুল কমানো যায়: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বুদ্ধি মানুষের মতো না হলেও এই বুদ্ধিতে কোন ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। মানুষ একই কাজ বারবার করার সময় কিছু ভুল হয় কিন্তু এটা এক ধরনের প্রোগ্রাম যা একই কাজ হাজারবার করলেও বিন্দু পরিমানও ভুল হবে না।
- ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো: এআই কে দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অনেক ধরনের কাজ খুব সহজেই করানো যায়। যা কোন মানুষ দিয়েই করানো হলে প্রাণের ঝুঁকি এবং মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে। যেমন: গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান গবেষণা, পরমাণু গবেষণা, আগুন নিয়ন্ত্রণ করা।
- শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কারণ এটা মানুষের চেয়ে অনেক বেশি ভালোভাবে এবং খুব সহজেই অনেক কিছু বোঝাতে পারে। এটা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুযায়ী নানা ধরনের পরিবেশ তৈরি করে দেয়।
- ব্যক্তিগত সেবা প্রদান: এআই প্রতিটা মানুষের মনের ভাব বোঝার পাশাপাশি এটা আলাদা মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী আলাদাভাবে প্রদান করতে সক্ষম। তবে এটা বর্তমানে খুব বেশি মজবুত হয়নি ভবিষ্যতে আরো অনেক ভালো পারফর্ম করবে।
- তথ্য বিশ্লেষণ ও আগাম বার্তা: এআই অনেক কঠিন তথ্য খুব সহজেই বিশ্লেষণ করে সহজ ভাবে বোঝাতে সক্ষম। ব্যবসা পরিচালনার সময় নানা ধরনের জটিল তথ্যও খুব সহজেই বুঝে ব্যবসার পরিকল্পনা পরিবর্তন করা যাবে।
- সৃজনশীল কাজ সহজ করা: বর্তমানে এআই এর মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের কাজ খুব সহজেই করতে পারছি বিশেষ করে লেখালেখি, ছবি তৈরি করা এবং নানা ধরনের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম।
- দৈনন্দিন জীবনে সহায়তা নেওয়া: বর্তমানে ওপেন এআই-এর মাধ্যমে আমরা আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা ধরনের বিষয় নিয়ে জানতে পারি। এবং কঠিন কোনো বিষয় খুব সহজেই আমরা সহজ করে বুঝতে পারি।
- স্বাস্থ্য সেবায় ব্যবহার: বর্তমানে ইআই দিয়ে নানা ধরনের চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব এবং ভবিষ্যতে এটা আরো বিপ্লব ঘটাবে। কঠিন রোগ নির্ণয় এবং নানা ধরনের ভার্চুয়াল ডাক্তারের সেবা প্রদান করে খুব সহজেই রোগীদের পরামর্শ প্রদান।
- পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো: এই পরিবহন ব্যবস্থা তে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চলেছে। বিশেষ করে নানা ধরনের গাড়িতে সচালিত ড্রাইভিং সিস্টেম দেওয়া হচ্ছে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নতির ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার করা হচ্ছে।
- ব্যবসা এবং বিপণনে দারুন পরিবর্তন: ব্যবসার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দারুন পরিবর্তন এসেছে এবং ব্যবসার উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিয়াই ব্যবহার করে খুব সহজেই গ্রাহকদের মনোভাব বিশ্লেষণ করা সম্ভব হচ্ছে এবং সঠিকভাবে বিজ্ঞাপন লক্ষ্যবস্তু অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে।
- কৃষি কাজে বিপ্লব: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কৃষিকাজে দক্ষতা বাড়ানো এবং কিসের উন্নতিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। নানা ধরনের ড্রোন ব্যবহার করে জমির পরিচর্যা, পর্যবেক্ষণ, জমিতে সঠিক বীজ বপন এবং সঠিক কীটনাশক এর ব্যবহার করে কৃষির উন্নতি সম্ভব।
- জলবায়ু পরিবর্তনে মোকাবিলা: এর ব্যবহার করে খুব সহজেই পরিবেশের অবস্থা বিশ্লেষণ এবং অবস্থান নানা ধরনের সমস্যা পর্যবেক্ষণ করা যাবে। যা পরিবেশগত নানা ধরনের সমস্যা এবং দুর্যোগ মোকাবেলা করতে সহায়ক।
- আইন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা: ইয়াই ব্যবহার করে আইন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে উন্নত করা সম্ভব কারণ এ আই খুব সহজেই অপরাধীকে সনাক্ত করতে পারবে নানা ধরনের বিশ্লেষণ করে। এবং এআই এর মাধ্যমে সাইবার হ্যাকিং আক্রমণ ও প্রতিরোধ করা সম্ভব।
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতি সাধন: এআই ব্যবহার করে খুব সহজেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণা করে নানা ধরনের নতুন প্রযুক্তি উদযাপন করা সহজ হবে। বিয়াই মহাকাশ গবেষণায় ব্যবহার করা হচ্ছে পাশাপাশি প্রকৃতির ভাষা বিশ্লেষণ করতেও নানা ধরনের গবেষণা করা হচ্ছে এআই দিয়ে।
- ভাষা অনুবাদ ও যোগাযোগ সহজ: আই ব্যবহার করে আমরা যে কোন ধরনের ভাষা খুব সহজেই বুঝতে পারি বা অনুবাদ করতে পারি। এবং ওই ভাষার মূল কথাগুলো খুব সহজেই এআই বোঝাতে সক্ষম। google translate এর মত নানা ধরনের এআই দিয়ে ভাষা অনুবাদ করা যায়।
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার বৈশিষ্ট্য
- অটোমেটিক সিদ্ধান্ত: প্রযুক্তি বড় ধরনের তথ্য বিশ্লেষণ করে নিজে নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে এবং এটার ফলাফল বিশ্লেষণ করে।
- নিজের শিক্ষণকে উন্নতি করে: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে আপডেট করে এবং নতুন নতুন শিক্ষা অর্জন করে। এটা প্রকৃতিকে বোঝে এবং মানুষের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করে। মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে এটি নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে কারণ গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কাজ করে।
- প্রাকৃতিক ভাষা প্রক্রিয়া: এটা মানুষের মনোভাব এবং মানুষের বিহেভিয়ার বুঝতে পারে। বিশেষ করে চ্যাটবোট, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এগুলো মানুষের ভাষা বুঝে সহায়তা করতে পারে।
- দৃষ্টিশক্তি: বর্তমানে আমরা এআই দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ছবি ভিডিও এবং বাস্তব জগতের বস্তু সনাক্ত করতে পারি। যেকোনো কিছুর ছবি এবং যেকোনো কিছুর নাম দিলেই এআই সহজেই বুঝতে পারে।
- রোবটিক্স দক্ষতা: এয়ায় রয়েছে রোবোটিক্স ধরনের দক্ষতা যা জটিল কাজ খুব সহজেই সম্পন্ন করতে পারে এবং আধুনিক শিল্প ক্ষেত্রে রোবটিক্স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
- ডেটা এনালাইটিকস: কঠিন এবং জটিল ডেটা এনালাইটিকস করে সে বিষয়ে নানা ধরনের ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস দিতে পারে। এটি ব্যবসা তথ্য বিশ্লেষণ করে ব্যবসার পরিবর্তনে সাহায্য করে।
- সৃজনশীল কাজ করার ক্ষমতা: এ দিয়ে নানা ধরনের জটিল এবং কঠিন কাজ করা হচ্ছে বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে আরো সহজেই করা যাবে। যেমন এআই দিয়ে ছবি আঁকা, লেখালেখি করা, এআই দিয়ে ভিডিও তৈরি করা, এআই দিয়ে নানা ধরনের সংগীত রচনা করা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অসুবিধা কি কি
- এআই ব্যবহারের ফলে অনেকে চাকরি হারাবে।
- এআই ব্যবহার ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তার জন্য হুমকি।
- কিছু লোক এটার অপব্যবহার করে সমাজের ক্ষতি সাধন করতে পারে।
- মানবিক যোগাযোগের অভাব দেখা দিতে পারে। ইহা এখনো আমাদের আবেগ অনুভূতি সম্পন্ন বুঝতে পারে না এজন্য এটি কখনো সেবা ও শিক্ষা ক্ষেত্র সংযোগ স্থাপন করতে ব্যর্থ হতে পারে।
- এআই ব্যবহারের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতার প্রশ্ন উঠতে পারে।
- এটার প্রবল ব্যবহারের ফলে মানবতার ওপর থেকে নির্ভরতা উঠে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
- সিস্টেম ভাঙ্গনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অনেক সময় ছোট ছোট ত্রুটির কারণে সিস্টেম ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে।
লেখকের শেষ কথা
এআই প্রযুক্তি বিপ্লবের এক নতুন চালিকাশক্তি। ভবিষ্যতে আমরা দিয়ে আমাদের জন্য দিন নানা ধরনের কাজকর্ম, শিক্ষা, সেবা প্রদান করতে সক্ষম হব। এই আইডিয়া আমাদের নানা ধরনের তথ্য বিশ্লেষণ জটিল কাজ কর্ম খুব সহজেই করতে পারব। এআই আমাদের জীবনকে অনেক সহজতর করতে চলেছে।
তবে এআই ব্যবহারে কিছু সমস্যা হতে পারে অনেক মানুষের চাকরি হারানোর পাশাপাশি দিন দিন মানুষের উপর ভরসা কমে যাবে। এআইয়ের উপর ভরসা বৃদ্ধি পাবে। এবং এআইয়ের কিছু ত্রুটির কারণে আমাদের অনেক বড় ক্ষতির সম্ভাবনা থাকতে পারে এজন্য একটু সচেতন ভাবে আমাদের এই ব্যবহার করতে হবে। সচেতন ভাবে এআই ব্যবহার করলে আমরা এআই থেকে অনেক উপকৃত হতে পারব।
এখানে কমেন্ট করুন
comment url