শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় ব্যায়াম এবং কাজ সমূহ

শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কাজ ও ব্যায়াম নিয়ে এই পোস্ট সম্পূর্ণ বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। যাদের শ্বাসকষ্ট সমস্যা রয়েছে কিভাবে ভালো করব চিন্তায় আছেন তারা এই পোস্টটি সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করুন।
শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কাজ ও ব্যায়াম
বর্তমানে আমাদের পরিবেশগত সমস্যা এবং পাশাপাশি আমাদের অভ্যাসগত সমস্যার কারণে আমাদের ফুসফুসের নানার জন্য সমস্যা জনিত রোগে ভুগে থাকি পাশাপাশি শ্বাসকষ্টের মতো এই অসুবিধা গুলো হয়েই থাকে। বর্তমানে সারা পৃথিবীতে এই রোগের সংখ্যা অনেক বেশি। তো চলুন এই বিষয়ে আলোচনা করি-

শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি 

শ্বাসকষ্ট মূলত নির্দিষ্ট কোন রোগ বা অসুখ নয় এটা শরীরের কিছু রোগের কারণে দেখা দেয় এবং হয়ে থাকে। বিশেষ করে ফুসফুসের সমস্যা গ্যাসের সমস্যা এবং হৃদপিন্ডের সমস্যার কারণে ও নান ভাবে শ্বাসকষ্ট রোগ দেখা দিতে পারে। সর্দি কাশি জ্বরের প্রভাবের ফলেও শ্বাসকষ্ট রোগ হয়ে থাকে। শ্বাসকষ্টের অনেক রকম প্রকারভেদ রয়েছে প্রথমে আমাদের এটা বুঝতে হবে। 

বিশেষ করে অনেকের এলার্জি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। আবার কারো সর্দি কাশির জন্য বুকে কফ জোমে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আবার অনেকের ফুসফুসের নানা ধরনের সমস্যা এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। শ্বাসকষ্টের ধরনের উপর নির্ভর করে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বিষয়গুলো নিয়ে নিচে আরেকটু ভালো করে আলোচনা করা হলো -

সর্দি কাশি জনিত শ্বাসকষ্ট: এই ধরনের শ্বাসকষ্টর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী পদক্ষেপ হচ্ছে আপনাকে গরম পানি খেতে হবে। চা কফি খেতে পারেন আদা এবং লবঙ্গ দিয়ে। অথবা একটু গরম পানিতে মধু এবং আদা দিয়ে খেতে পারেন। 

এজমা বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা:  যাদের এজমা এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা তাদের অতিরিক্ত বেশি সমস্যা হলে তৎক্ষণাৎ গ্যাস দিতে পারেন এবং ইনহেলার ব্যবহার করতে পারেন। এটা আপনার প্রাথমিক চিকিৎসা একটু আরাম মনে করলে তখন ডাক্তারের কাছে গিয়ে ভালোভাবে ওষুধ খেতে হবে।

শুয়ে থাকতে সমস্যা: আপনার শ্বাসকষ্টের কারণে যদি রাতে ঘুমাতে সমস্যা হয় তাহলে আপনি মাথার দিকটা একটু উঁচু করে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এভাবে ঘুমালে আপনার উপরের দিকের তরল নিজ দিকে নেমে যাওয়ার ফলে শ্বাসকষ্ট অনেকটা কমে যাবে। 

এলার্জি জনিত শ্বাসকষ্ট দূর করা: আপনার যদি শাস্তি কষ্টের পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে দেখতে হবে আপনার অ্যালার্জিজনিত কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা। বিশেষ করে অনেক ধরনের খাবার রয়েছে যেগুলো খাওয়ার পরে পরে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। এজন্য বিশেষ করে এলার্জি জাতীয় খাবার যেমন: পুঁইশাক, ইলিশ, মাছ, গরুর মাংস, হাঁস এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

গরম তেল দিয়ে মাসাজ: শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বেশি যদি হয়ে থাকে। অনেক কষ্ট হচ্ছে এরকম মনে হলে গরম সরিষার তেল দিয়ে যতটা সহ্য করা যায় শরীরে বুকে এবং পিঠে মাসাজ করতে হবে। এভাবে মাসাজ করলে সরিষা তেল এবং গরম হওয়ার ফলে আপনার বুকে জমে থাকা কফ এবং নানা ধরনের সমস্যা দূর হবে।

শ্বাসকষ্ট হলে করনীয় ব্যায়াম সমূহ 

আপনার যদি নিয়মিত হালকা হালকা শ্বাসকষ্ট অনুভব হয়। তাহলে এই ধরনের ব্যায়াম করলে আপনি অবশ্যই অনেক ভালো ফিল করবেন। বিশেষ করে আমরা যখন ব্যায়াম করে থাকি ব্যায়াম করার সময় আমাদের ফুসফুস সংকোচন প্রসারিত হয় এই সময়টা ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি হয় যার ফলে আমাদের ফুসফুসের নানা সমস্যা দূর হয়। 

  • আপনার যদি সম্ভব হয় তাহলে নিয়মিত কিছু সময় দৌড়াদৌড়ি করুন এটা ফুসফুস কে সংকোচন প্রসারিত হতে সাহায্য করে এবং ফুসফুসের শক্তি বৃদ্ধি করে। 
  • আপনি নিয়মিত সাঁতার কাটতে পারেন কারণ সাঁতার কাটার ফলে ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ফুসফুসে নানা ধরনের সমস্যা এবং ব্যাকটেরিয়া দূর হয়। 
  • গভীর শ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে। নিয়মিত গভীরভাবে শ্বাস নিন এবং শ্বাস ছেড়ে দিন এভাবে কিছুক্ষণ ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। এই ব্যায়াম করার ফলে আপনার ফুসফুসে রক্ত এবং অক্সিজেন সরবরাহ ভালো থাকবে। এবং ফুসফুসের নানা ধরনের দুর্বলতা এবং ব্যাকটেরিয়া দূর হবে।
  • ভার উত্তোলন এবং শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম করতে পারেন। এই ধরনের ব্যায়াম করলে আমাদের শরীরের সকল পেশী এবং মাংসপেশি গুলো শক্তিশালী হয়ে থাকে। পাশাপাশি ফুসফুসের কার্যক্ষমতা উন্নতি হয় এবং নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর হয়।
  • ছোট বাচ্চাদের যদি শ্বাসকষ্ট রোগ দেখা দেয় তাহলে তাদের নিয়মিত দৌড়াদৌড়ি এবং ফুটবল খেলার মাধ্যমে শ্বাসকষ্ট অনেকটা ভালো করা যেতে পারে। এজন্য ছোট ছেলেমেয়েদের যদি শ্বাসকষ্ট হয় তাদের দৌড়াদৌড়ি এবং শরীর চর্চা খেলাধুলায় উৎসাহ দিতে হবে।

শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করতে করণীয় 

বিশেষ করে বাংলাদেশের পরিবেশ অনেক খারাপ। আমরা যখন একটা দিনের নিঃশ্বাস নি আমাদের নিশ্বাসের সাথে অনেক জীবাণু পরিবেশ খারাপ হওয়ার কারণে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এবং কিছু এলাকা আছে যেগুলোর রাস্তায় অনেক ধুলোবালি থাকে আর ধুলোবালীর কারণে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এ ধরনের পরিবেশ থেকে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হলো-

মাস্ক ব্যবহার করা:  আপনি যখন ধুলোবালির এলাকার রাস্তায় যাওয়া আসা করবেন তখন আপনি অবশ্যই মুখে মাস্ক ব্যবহার করবেন যাতে ধুলোবালি আপনার নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ না করতে পারে। 

এবং পাশাপাশি অনেক ধরনের কৃষি কাজ আছে যেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ধুলোবালি ঘাটাঘাটি করতে হয়। আপনি যদি এ ধরনের কৃষি কাজ করেন যেখানে ধুলাবালি থাকে তাহলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করে কাজ করতে হবে।

ফ্রিজের ঠান্ডা পানি না খাওয়া: যাদের শ্বাসকষ্ট বা এলার্জি জাতীয় সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই ফ্রিজের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে শীতের সময় তো ধারে কাছেও যাওয়া যাবে না এবং গরমে কারো যদি সমস্যা না হয় খেতে পারে। তবে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খেলে সমস্যা হতে পারে এজন্য বিরত থাকুন।

পানি ফুটিয়ে খাওয়া:  যাদের শ্বাসকষ্টের পরিমাণ অনেক বেশি এবং অসহ্যকর অবস্থা ভোগ করতে হয়। তারা অবশ্যই সাধারণ পানি না খেয়ে পানি ফুটিয়ে খেলে অনেক ভালো ফলাফল দেখতে পাবে।

লেখকের শেষ কথা

শ্বাসকষ্ট ও নির্দিষ্ট কোন রোগ নয় এটা আমাদের শরীরের অনেক রোগের ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য আপনাকে আগে বুঝতে হবে যে শ্বাসকষ্টের কারণটা কি এবং এই বিষয়টা যদি আপনি বুঝতে না পারেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।  নিয়মিত ব্যায়াম করুন এটা শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য উপকারী।

এবং বুকের কফ জমে থাকার কারণে শ্বাসকষ্ট হওয়ার রোগীদের ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে পাশাপাশি শরীরে সরিষা তেল মাসাজ করার অভ্যাস করতে হবে। সরিষা তেলের মাথা যেটা অনেক উপকারী একটা পদ্ধতি। এবং নিয়মিত গরম জাতীয় খাবার যেমন: মধু পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খেলে এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করা সম্ভব।

পোস্টটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

আগের পোস্ট পড়ুন পরের পোস্ট পড়ুন
এখনো কেউ কমেন্ট করে নি
কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন

comment url