বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় কাজ সমূহ

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় কাজসমূহ নিয়ে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বাচ্চাদের দাঁত ওঠা যদিও একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তবে দাঁত ওঠার সময় কিছু পদক্ষেপ ভুল হলে দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য ভবিষ্যতে যাতে বাচ্চাদের দাঁতের কোন সমস্যা না হয়। 

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় কাজ সমূহ

এবং ওই সময়েও দাঁতের সমস্যা জনিত নানা ধরনের ভুল কাজ যেগুলো করা যাবে না এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। এবং বাচ্চার স্বাভাবিক সুস্থের জন্য যা যা করতে হয় এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পারবেন। 

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় 

কামড়ানোর জন্য পরিষ্কার জিনিস: বাচ্চাদের যখন নতুন দাঁত উঠে তখন বাচ্চাদের মাড়ি কিড়মিড় করে এবং তাদের কামড়ানোর মনোভাব সৃষ্টি হয়। এজন্য এই সময় বাচ্চাদের হাতের কাছে পরিষ্কার কোন খেলনা এবং নরম জাতীয় কিছু রাখতে পারেন। 

পরিষ্কার ঠান্ডা কাপড়:  বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় কামড়ানোর প্রবণতা অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে। তাই তাদের প্রশান্তির জন্য আপনি ফ্রিজে রাখা পরিস্কার কাপড় তাদের কাছে দিতে পারেন। তাহলে তারা ঠান্ডা জিনিস কামড়ানোর ফলে প্রশান্তি অনুভব করবে এবং পরিষ্কার জিনিসের কারণে কোন অসুবিধা হবে না। 

মিষ্টি জাতীয় খাবার:  শিশুদের যখন প্রাথমিক দাঁত ওঠে তখন মিষ্টি জাতীয় খাবার না দেওয়াই ভালো এতে দাঁত ওঠার সময় নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। এবং ডাক্তারেরা নিষেধ করে এ সময় মিষ্টি জাতীয় খাবার না খাওয়ানোর জন্য। 

মাড়ি ম্যাসেজ করা:  নতুন দাঁত ওঠার সময় বাচ্চাদের দাঁতের মাড়িতে অস্বস্তি হতে পারে এবং হালকা ব্যথা অনুভব হতে পারে। এজন্য এই এ সময় পরিষ্কার একটা কাপড় দিয়ে আঙ্গুলে বাচ্চাদের মারি হালকাভাবে মেসেজ করলে আরাম পাবে। 

লালা পরিষ্কার করতে হবে:  বাচ্চাদের নতুন দাঁত ওঠার সময় অনেকের মুখে প্রচুর পরিমাণ লালা জমতে পারে। এই লালা জমার ফলে সমস্যা হতে পারে এজন্য মাঝে মাঝে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুখের লালা মুছে দিন। 

সঠিক খাবার খাওয়ানো:  বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় খেয়াল রাখবেন নরম এবং স্বাস্থ্যকর হালকা খাবার খাওয়ানোর। এতে শিশুর মাড়ির কোন সমস্যা হবে না এবং সঠিকভাবে দাঁত উঠতে পারবে। 

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার লক্ষণসমূহ 

  • দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং লাল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে 
  • দাঁত ওঠার লক্ষণ প্রচুর পরিমাণে লালা ঝরবে 
  • কামড়ানোর প্রবণতা অনেক বেড়ে যাবে। যে কোন কিছুতেই কামড়াতে চাইবে 
  • শিশুরা কান্নাকাটি করতে পারে এবং তাদের অসুবিধা হতে পারে ।
  • খাওয়া এবং ঘুমানোর নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
  • মাড়ি ব্যথা হতে পারে এবং ব্যথার কারণে হালকা হালকা জ্বরও আসতে পারে। 

এই বিষয়গুলোর উপর খেয়াল রাখলে বুঝতে পারবেন আপনার শিশুর দাঁত ওঠার সময় হয়ে গেছে। দাঁত ওঠার সময় কি করবেন এবং করণীয় বিষয় নিয়ে উপরে আলোচনা করা হয়েছে ওগুলো মেনে চলবেন। এবং জ্বর আসলে এবং শিশু বেশি কান্নাকাটি করলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। 

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় 

বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বাচ্চাদের প্রাথমিক দাঁত ওঠার সময়সূচী কমবেশি সবার ক্ষেত্রে এক একই দেখা যায়। তবে কারো কারো কোন সমস্যা জনিত কারণে কম-বেশি হতে পারে। তো চলুন সময়সূচী আলোচনা করি-

  • ৬-১০ মাসঃ  এ সময় বাচ্চাদের নিচের সামনের দুটি দাঁত ওঠে।
  • ৮-১২মাসঃ   ৮ থেকে ১২ মাসে উপরের সামনের দুটি দাঁত উঠতে দেখা যায়। 
  • ১০-১৩মাসঃ  এই সময়ে উপরের পাশের দাঁত উঠতে দেখা যায় 
  • ১০-১৫মাসঃ   নিচের পাশের দুটি দাঁত ওঠে। 
  • ১৪-২০মাসঃ  এই সময়ে প্রথম মোলার পেছনের দাঁত ওঠা শুরু হয়।
  • ১৮-২৪মাসঃ  এই সময় পেরিয়ে আসলে ক্যানাইন বা কাঁচি দাঁত উঠতে দেখা যায়। 
  • ২৫-৩৩মাসঃ   দ্বিতীয় মোলার এবং সবচেয়ে পেছনের দাঁত গুলো উঠতে শুরু করে। 
  • তিন বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ দুধ দাঁত গজিয়ে যায়। 

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন 

বিশেষ করে এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও অনেক সময় নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং জ্বর আসা। শিশুর পায়খানা ও হতে পারে। যখন এই সব ধরনের সমস্যা দেখা দিবে এবং শিশু প্রচন্ড কান্নাকাটি করতে থাকবে খাওয়া-দাওয়া এবং ঘুম সঠিকভাবে হবে না। তখন অবশ্যই ডাক্তারে পরামর্শ নিতে হবে। এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করাতে হবে।

লেখকের শেষ কথা 

বাচ্চাদের দাঁত উঠায় এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হওয়ার পরেও বাচ্চারা তাদের সমস্যা হলে সবকিছু বলতে পারে না এজন্য দাঁত ওঠার সময় কিছু করণীয় কাজ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই বিষয়গুলো একটু খেয়াল করলে খুব সহজেই আপনার বাচ্চার দাঁতের স্বাভাবিক সুস্থতা বজায় থাকবে। 

এবং বাচ্চাদের প্রথম দাঁত ওঠার সময় ব্যথা এবং কান্নাকাটি অনুভব করলে এটার পরিমাণ যদি অতিরিক্ত হয়ে থাকে বাচ্চা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে এরকম মনে হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চার সঠিকভাবে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি প্রয়োজন হলে ওষুধ খাওয়াতে হবে। এবং এ সময় বাচ্চার পাশে পরিষ্কার এবং নরম জিনিস রাখুন যাতে প্রয়োজনে কামড়াতে পারে।


পোস্টটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

আগের পোস্ট পড়ুন পরের পোস্ট পড়ুন
এখনো কেউ কমেন্ট করে নি
কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন

comment url