হাতিশুর গাছের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

হাতিশুর গাছের উপকারিতা রয়েছে অনেক। প্রাচীন কাল থেকেই এই ভেষজ দিয়ে নানা ধরনের চিকিৎসা করা হয়েছে। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা এই ভেষজ গাছের উপর নানা ধরনের গবেষণা করছে  এই গাছের সম্পূর্ণ গুনাগুন পাওয়ার জন্য। এ পোস্টে হাতে সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। 

হাতিশুর গাছ

হাতিশুর গাছের উপকারিতা নিয়ে যাদের মনে সন্দেহ রয়েছে। এবং এই গাছ দিয়ে কি হয় এই বিষয়ে অনেকেই জানেন না তারা পোস্টটি ভাল করে পড়ুন তাহলে এই গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। হাতিশুর গাছের কিছু আশ্চর্য উপকারিতা রয়েছে চলুন এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক। 

হাতিশুর গাছের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা

হাতিশুর গাছ ছোট প্রজাতির ভেষজ গুণসম্পন্ন একটি কাজ। এটি দেখতে খুব সাধারন হলেও এটিতে নানা ধরনের ভেষজ গুণসম্পন্ন উপাদান রয়েছে। হাতিশুর গাছ মূলত এক থেকে দেড় ফুট লম্বা হয়ে থাকে। এটি খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায় এবং বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে এটি বেশি দেখা যায়। হাতিশুর গাছের কান্ড তুলনামূলকভাবে নরম হয়ে থাকে এবং এই গাছের গায়ে লোম বিস্তৃত থাকে। 

হাতিশুর গাছের পাতা মাঝারি আকৃতির হয়ে থাকে এবং গাছের রং সবুজ। পাতা খসখসে এবং লোমোশ। এবং এই গাছের বাঁকানো ফুলের ছড়া থাকে। সাধারণের ফুল এবং ফুলের ছড়া দেখতে হাতির শরীর মত। এজন্য এই গাছকে হাতি সুর বলা হয়ে থাকে। এই ছোট্ট প্রজাতির ভেষজ গাছের নানা ধরনের উপকারী গুণ সমৃদ্ধ রয়েছে। 

হাতিশুর গাছের উপকারিতা কি কি

জ্বর ভালো করেঃ হাতিশুর গাছের পাতা এবং কাণ্ডের নিঃশ্বাস কোন জ্বরের রোগী কি সেবন করালে খুব শীঘ্রই জ্বর ভালো হয়ে যায়। এবং বিশেষ করে ম্যালেরিয়া রোগে যারা ভোগেন তাদের ক্ষেত্রে এই গাছের নির্যাস অনেক কার্যকরী একটা ঔষধ। এজন্য জ্বর ম্যালেরিয়াতে হাতিশুর গাছের নির্যাস খাওয়ানো অনেক উপকারী। 

সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্ট দূর করেঃ আমরা যদি প্রচন্ড সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্টের রোগে ভুগে থাকি তাহলে হাতিশুর গাছের রস একটু হালকা গরম করে মধু সমেত সেবন করলে আমরা খুব দ্রুত শ্বাসকষ্ট এবং সর্দি কাশি থেকে রেহাই পাব। 

ঘা এবং চর্ম রোগেঃ হাতিশুর গাছের এক ধরনের অ্যান্টি সেফটি উপাদান রয়েছে যা আমাদের ত্বকের নানা ধরনের ইনফেকশন এবং ক্ষত ভালো করতে খুব দ্রুত কার্যকরী উপায়। এজন্য বিভিন্ন  ধরনের চর্ম রোগের ইনফেকশনে হাতে সুরের ব্যবহার করলে খুব দ্রুত সে রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। 

আমাশয় ও ডায়রিয়াঃ  দীর্ঘদিন ধরে যাদের পেটের পিঠা বিশেষ করে আমাশা এবং ডায়রিয়া রোগের উপসর্গ রয়েছে। তারা এই গাছের নির্যাস নিয়মত সকালে খালি পেটে একটু আখের গুড় সমেত সেবন করলে খুব দ্রুত পেটের নানা ধরনের সমস্যা দূর হবে। 

কিডনির সমস্যা দূর করেঃ  হাতিশুর গাছ কিডনি পরিষ্কার রাখে এবং কিডনির নানা ধরনের সমস্যা দূর করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বা টক্সিন বের করে দেয় এর ফলে কিডনি পরিষ্কার থাকে এবং শরীরের নানা ধরনের চর্মরোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। কিডনি ভালো রাখতে অবশ্যই হাতিশুর গাছ মাঝেমধ্যে কিছুদিন নিয়মিত সেবন করা উত্তম। 

যৌন শক্তি বৃদ্ধিঃ যারা নানা ধরনের যৌন দুর্বলতায় ভোগেন তারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে হাতিশুর গাছের শিকড় মধু সমেত সেবন করলে আপনার হারানো শক্তি ফিরে পাবেন। ইতি জনশক্তি বৃদ্ধিতে এক অব্যক্ত ওষুধ সেবনের ফলে আপনার যৌন শক্তিকে অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয় এবং আপনার নানা ধরনের শারীরিক দুর্বলকে দূর করে। এজন্য যারা দীর্ঘদিন যেন সমস্যায় ভোগেন তারা নিয়মিত হাতিশুর গাছের শিকড় মধু সুমিত সেবন করলে অনেক ভালো ফলাফল দেখতে পাবেন। 

হাতিশুর গাছ খাওয়ার বা ব্যবহারের নিয়ম 

হাতিশুর গাছের নানা উপকারিতা এবং নানা রোগের সেফা রয়েছে। তবে এটা কিছু সঠিকভাবে সেবন করলে আপনার উপকারিতা দীর্ঘস্থায়ী এবং বেশি কার্যকর করে। চলুন খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন। 

রস পান করাঃ হাতিশুর গাছের সমস্ত কিছুই আপনার জন্য উপকারী। এই গাছ তুলে ভালো করে ধুয়ে তারপরে গাছ থেকে রস বের করে নিন এবং এই রস দিনে একবার বা দুবার খালি পেটে মধু সমেত পান করলে এটি জ্বর ও সর্দি কাশি ভালো করবে। 

এবং যাদের শরীর দুর্বল এবং শারীরিক শক্তি কম। তারা এই গাছ নিয়মিত মধু সমেত খালি পেটে সেবনে তাদের শারীরিক শক্তি এবং যৌন শক্তি বৃদ্ধি করবে।

পেস্ট তৈরি করে ব্যবহারঃ  নানা ধরনের পোড়া, ক্ষত এবং চর্ম রোগের জায়গায় হাতি সুরের পাতা বেটে পেস্ট তৈরি করে ব্যবহার করলে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। হাতি সুরের পাতা নিয়ে ভালোভাবে থুয়ে তা পেস্ট তৈরি করে সেই ক্ষতরস্থানে ব্যবহার করা। 

শিকড় চিবিয়ে খাওয়াঃ  আপনি চাইলে হাতিশুর গাছের শিকড় তুলে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন। এভাবে খাওয়ার ফলে আপনার মুখের নানা ধরনের জীবাণু ধ্বংস হবে এবং দাঁতের মাড়ির নানা ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। 

আমার শেষ কথা  

হাতিশুর গাছের উপকারিতা নিয়ে এই পোস্টে আলোচনা করার চেষ্টা করলাম। বিশেষ করে যাদের শারীরিক দুর্বলতা রয়েছে এবং শরীর ক্ষয় হয়। তারা নিয়মিত সকালে মধুর সাথে হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে শরীরের নানা ক্ষয় জনিত সমস্যা এবং শারীরিক দুর্বলতা দূর হবে। বিশেষ করে পুরুষদের যে জন্য এটা অনেক কার্যকরী। 

হাতিশুর গাছ ত্বকের জন্য অনেক উপকারী আপনার মুখের ত্বকের নানা ধরনের মেছতা, ব্রণ অথবা কালো দাগ থাকলে হাতিশুর গাছের পাতা থেঁতো করে পেস্ট বানিয়ে সপ্তাহে তিন চার দিন ব্যবহার করুন। তাহলে আপনি এটা কয়েক সপ্তাহ করার ফলে আপনার মুখের দাগ দূর হবে। এবং মুখে ব্যবহারের সময় এলার্জির সমস্যা দেখা দিলে ব্যবহারে বিরত থাকুন।


পোস্টটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

আগের পোস্ট পড়ুন পরের পোস্ট পড়ুন
এখনো কেউ কমেন্ট করে নি
কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন

comment url