শরীরকে সুস্থ রাখার উপায়

 শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় নিয়ে এই পোস্টে একদম সম্পূর্ণ আলোচনা করা হবে। আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে আমাদের শরীরের সুস্থতা। কারণ একটা অসুস্থ মানুষ জীবনে কিছুই উপভোগ করতে পারে না। এজন্য আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সব সময় সচেতন থাকতে হবে।  

শরীরকে সুস্থ রাখার উপায়

আমরা বর্তমানে নানা ধরনের বাজে খাবারদাবার এবং বাজে অভ্যাসের কারণে আমাদের শরীরের নানা ক্ষতি করে ফেলি। ক্ষতি হওয়ার পরে আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের শরীর কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যতক্ষণ ডাক্তারের কাছে না যায় ততক্ষণ আমাদের শরীরের খেয়াল রাখি না। তবে আপনি যদি অল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য যাতে আপনার শরীরের বড় কোন ক্ষতিগ্রস্ত থেকে আপনি বাঁচতে পারেন এবং সুন্দর জীবন যাপন করতে পারেন। 

পোস্ট সুচিপত্রঃ  শরীরকে সুস্থ রাখার উপায়

শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় 

পৃথিবীতে অনেক ধন-সম্পদ রয়েছে তার মধ্যে সুস্থ শরীর একটা বড় সম্পদ। আমরা যখন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকি তখন আমরা পারিবারিক, সামাজিক এবং নানা ধরনের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারি। একটা অসুস্থ মানুষ খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে কোন কাজই স্বাভাবিক এবং সুন্দরভাবে করতে পারেনা। এজন্য জীবনকে উপভোগ করতে। এই সুন্দর পৃথিবীর সুন্দর দৃশ্য অনুভব করার জন্য আপনার সুস্বাস্থ্যের কোন জুড়ি নেই। একটা মানুষ শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে পারিবারিক এবং আর্থিক নানা সমস্যার শিকার হয়ে থাকে। পাশাপাশি অসুস্থ মানুষ পরিবারের কাছে বোঝা। 

আরো পড়ুনঃ ফর্সা হওয়ার উপায়  

আমাদের এই ছোট্ট জীবনে আমাদের কিছু ভালো কাজ এবং ভালো কিছু অভ্যাস আমাদের জীবনকে সুন্দর এবং আনন্দময় করে তুলতে পারে। আর কিছু বাজে কাজ বাজে অভ্যাসের ফলে আমাদের জীবনের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যেতেও পারে। এজন্য আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে আমাদের ভালো কাজকর্মে অংশগ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি নানা ধরনের বাজে কাজকর্ম এবং বাজে অভ্যাস বা বাজে খাবার-দাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। তাহলে আপনি একজন সুস্থ এবং সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবে। যা আপনার পরিবারের কাছে আপনি বোঝা না হয়ে সম্পদ হতে পারবেন। এবং একজন সচেতন সুস্থ মানুষ রাষ্ট্রের জন্যও একটা সম্পদ।

এই পোস্টে সুস্থ থাকার নিয়ম-কানুন এবং খাদ্য অভ্যাস নিয়মিত জীবন ধারা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে যা আপনাকে সুস্থ থাকতে অনেক সহযোগিতা করতে পারে তো চলুন পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

শরীরকে সুস্থ রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার 

শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় হিসেবে প্রথমে রয়েছে খাবার। খাবার আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য আমাদের নিয়মিত স্বাস্থ্যকর সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। তাহলে আমরা শরীরকে সুস্থ রাখতে পারব। এখানে স্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ে আলোচনা করা হলো: 

শাকসবজি 

শাকসবজি আমাদের শরীরে নানা ধরনের ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করে আমাদের শরীরের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সহায়তা করে। শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম, পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় উপাদান। এই উপাদানগুলো আমাদের শরীরের তাপশক্তি উৎপাদন করার পাশাপাশি এগুলোর ঘাটতি পূরণ করে। 

শরীরকে সুস্থ রাখার উপায়

উদাহরণ: পালং শাক,লাল শাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ঢেঁড়স, করলা, বেগুন, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, কুমড়া, পটল, গাজর, কলা, পুইশাক, কচু শাক, কলমি শাক,চিচিঙ্গা, টমেটো, মরিচ, সিম, মটরশুঁটি ইত্যাদি শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান রয়েছে। আমাদের নিয়মিত পাঁচ রংয়ের শাকসবজি খেতে হবে তাহলে আমাদের শাকসবজি থেকেই প্রয়োজনের সব ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানগুলো পূরণ হয়ে যাবে।

স্বাস্থ্যকর শর্করা জাতীয় খাবার 

শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্যে প্রথমেই পাশে ভাতের কথা। আমরা কমবেশি সবাই জানি যে, মাছে ভাতে বাঙালি বলতে বাঙালির প্রধান খাবারই হচ্ছে ভাত। তবে এই ভাত আমাদের প্রচুর পরিমাণে ক্ষতি করে থাকে এজন্য আমাদের শর্করা জাতীয় খাবারে সচেতন থাকতে হবে বিশেষ করে শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে। এবং আমরা শর্করা না খেয়েও বেঁচে থাকতে পারবো না এজন্য স্বাস্থ্যকর শর্করা খাবারের নিয়মাবলী নিচে দেওয়া হল: 

  • বাদামি চাল 

আমরা সাদা চালের ভাত খাওয়ার পরিবর্তে বাদামি চালের ভাত খাওয়ার অভ্যাস করলে আমাদের শরীরটা অনেক বেশি ভালো থাকবে। কারণ এই বাদামি চালে অতিরিক্ত কোলেস্টরেল থাকে না এবং বাজে শর্করা এই বাদামী ছেলে খুব কম পরিমাণে থাকে যা আমাদের শরীরকে অনেক ভালো রাখবে। 

  • গমের রুটি 

গমের রুটিতে প্রোটিন ও ফাইবার ও পাওয়া যায় শর্করার পাশাপাশি যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এজন্য ভাতের পরিবর্তে আমরা যদি কমের রুটি খায় এটাও একটা ভালো অভ্যাস হতে পারে। এবং ভাত থেকে রুটিতে শারীরিক শক্তি বেশি উৎপাদন হয়। রুটি খেলে আপনি বেশি শক্তিশালী হতে পারবেন। 

  • মিষ্টি আলু 

আলুতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা রয়েছে তবে সাধারণ আলু আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এজন্য আপনি সাধারণ আলু না খেয়ে মিষ্টি আলো খেতে পারেন। কারণ মিষ্টি আলোতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে। পাশাপাশি শর্করা তো রয়েছেও এবং ভিটামিন এ রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ কিসমিস খাওয়ার  উপকারিতা 

ভাত, আলু এবং রুটি শর্করা জাতীয় খাবারের প্রধান উৎস। তবে আপনি যদি সাদা ভাত খান তাহলে অল্প পরিমাণ খেতে হবে আর বাদামী ভাত খেলে খেলে তো কোন সমস্যায় নেই। আর রুটি খাওয়ার সময় আপনি বাদামি রুটিও খেতে পারেন এটাও আরো বেশি উপকার পাশাপাশি কলা এবং আপেলের শর্করা পাওয়া যায়।

প্রোটিন জাতীয় খাবার 

শরীর সুস্থ রাখার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে প্রোটিন। প্রোটিন আমাদের দেহের কোষ এবং পেশী, ত্বক, হাড়ের গঠনে সহায়তা করে পাশাপাশি এটি শরীরের বৃদ্ধি, মেরামত, ক্ষয় পূরণ, রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। শর্করার পাশাপাশি প্রোটিন আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। স্বাস্থ্যকর প্রোটিন উপাদান নিয়ে আলোচনা করি।

  • ডাল ও শিম

ডাল, শিম ও মটরশুঁটি প্রোটিনের সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী উৎস। এবং এই ধরনের খাবারে স্বাস্থ্যকর প্রোটিন পাওয়া যায়। এবং ফাইবার রয়েছে যা হজম করতে সহযোগিতা করে। 

  • মাছ

মাছ একটি উচ্চমানের প্রোটিনের উৎস এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের একটি চমৎকার উৎস। ইলিশ, পাঙ্গাস, রুই, কাতলা, মৃগেল, চিংড়ি, টেংরা, শিং এবং কার্প জাতীয় মাছের প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়।

  • মাংস

মুরগির মাংস প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে যা আমাদের পেশী গঠনে সহযোগিতা করে। মুরগির মাংস প্রোটিনের স্বাস্থ্যকর উৎসব এটি অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে এবং এতে তেমন একটা কোলেস্টেরল নেই।

  • ডিম

ডিমকে প্রায়ই "সম্পূর্ণ প্রোটিন" হিসেবে ধরা হয়, কারণ এতে সকল প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা শরীর নিজে থেকে তৈরি করতে পারে না। ডিমের সাদা অংশে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে, যা পেশী গঠনে সহায়ক। ডিম ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

  • দই এবং দুধ

দুধ এবং দই ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং হাড় ও দাঁতের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও, দই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি হজমে সহায়ক এবং পেটের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

  • বাদাম ও বীজ

বাদাম, আমন্ড, কাজু এবং আখরোট, এবং বীজ, যেমন চিয়া বীজ ও ফ্ল্যাক্স সিড, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের একটা ভালো উৎস। এগুলোতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে, যা ত্বক, চুল এবং হার্টের জন্য উপকারী।

  • সয়াবিন ও তোফু

সয়াবিন এবং তোফু উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের অন্যতম প্রধান উৎস। এটি নিরামিষভোজীদের জন্য আদর্শ। সয়াবিনে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে এবং এতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে।

  • চিংড়ি ও সামুদ্রিক খাবার

চিংড়ি, স্ক্যালপ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক খাবার উচ্চমানের প্রোটিনে ভরপুর। এগুলোতে ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং প্রোটিনের পরিমাণ বেশি, যা ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহায়ক।

  • মটরশুঁটি

মটরশুঁটি একটি ভাল উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎস। এতে প্রচুর ফাইবার এবং ভিটামিন সি থাকে, যা হজমে সহায়ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরে অ্যামিনো এসিড তৈরি করে শারীরিক সক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।

  • ফলমূল 

শরীরকে সুস্থ রাখতে আমাদের নিয়মিত খাবার তালিকায় নানা ধরনের ফলমূল রাখতে হবে । কারণ ফলমূলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এর পাশাপাশি প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এজন্য স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকা অবশ্যই ফলমূল রাখতে হবে। 

শরীরকে সুস্থ রাখতে পানি পান

শরীরকে সুস্থ রাখতে পানির গুরুত্ব অপরিসীম। পানি হল মানবদেহের এক অবিচ্ছেদ্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ পানি শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানবদেহে প্রায় ৭০% অংশই পানি দ্বারা গঠিত। পানি আমাদের দেহের অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে পাশাপাশি বিভিন্ন কোষে পুষ্টি উপাদান নিশ্চিত করে। এজন্য আমাদের দিনে দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা উচিত। 

  • পানি পানের সঠিক নিয়ম 

পানি খুব সাধারণ জিনিস হলেও পানি সঠিকভাবে পান করলে আমাদের শরীরে স্বাস্থ্য রক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং ভুল নিয়মে পানি পান করার কারণে আমাদের শরীরে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়। যা আমরা ধরতেও পারি না। এজন্য সঠিকভাবে পানি পান করতে হবে তো চলুন নিয়ম গুলো জেনে নিন। 

  • সকালে খালি পেটে 

সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি পান করা এটা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং এই অভ্যাস নিয়মিত করলে আপনার পেট পরিষ্কার থাকবে এবং সারারাত ঘুমে থাকার ফলে আমাদের শরীরে পানি কমে যায় এবং সকালে উঠেই পানি পান করলে আমাদের শরীর হাইড্রেট হয় এবং আমাদের ব্রেন ভালো কাজ করে। 

  • খাবারের আগে ও পরে 

খাওয়ার ৩০ মিনিট থেকে ৪০ মিনিট আগে পানি পান করলে আপনার পাচনতন্ত্র সক্রিয় হয় এবং এটা খাবার হজমে সহযোগিতা করে যা আপনার পেটের স্বাস্থ্য বজায় রাখে।

এবং খাওয়ার সাথে সাথে পানি না পান করা। খাবার খাওয়ার সময় পানি পান করলে আপনার হজমের রস পাতলা হয়ে যায় এতে হজমের সমস্যা এবং পেটের গন্ডগোল সৃষ্টি হয়। যা আপনার গ্যাসের কারণ হতে পারে। এজন্য খাবার খাওয়ার 30 থেকে 40 মিনিট পর পানি পান করুন। 

  • অল্প অল্প করে পানি পান 

আপনি হয়তো বা জানেন না বোনের বাঘ এবং সিংহ পানি পান করার সময় খুব সামান্য পরিমাণ পানি আস্তে আস্তে খেয়ে থাকে। এতে আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম উন্নত হয় এবং শরীর মজবুত থাকে। এজন্য পানি পান করার সময় অবশ্যই জোরে জোরে পানি না পান করে আস্তে আস্তে  পানি পান করবেন।

একবারে বেশি পরিমাণ পানি না পান করে দিনের ফাঁকা সময় বা একঘন্টা পরপর পানি পান করুন এটা আপনার শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

  • বসে পানি পান 

দাঁড়িয়ে পানি পান করা সবচেয়ে একটা বাজে অভ্যাস এটা আমাদের শরীরের হাড়ের ক্যালসিয়াম ক্ষয় এবং কিডনির সমস্যা সৃষ্টি করে। এজন্য অবশ্যই চেষ্টা করবেন পানি বা তরল জাতীয় জিনিস খাওয়ার সময় বসে থেকে খাওয়ার জন্য।

অতিরিক্ত ঠান্ডা এবং ফ্রিজের পানি পান থেকে বিরত থাকবেন। কারণ ফ্রিজের পানি পান করলে আমাদের শরীরের নানা ধরনের সমস্যা হয়।

শরীর সুস্থ রাখতে ব্যায়াম 

শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় হিসেবে ব্যায়াম আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ব্যায়াম করা অপরিহার্য। কারন আমরা যখন ব্যায়াম করি আমাদের শরীর থেকে নানা ধরনের কোলেস্টেরল এবং টক্সিন ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায়। পাশাপাশি ব্যায়ামের কারণে আমাদের রক্ত চলাচল সঠিক থাকে আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অক্সিজেন সরবরাহ সঠিক হয়। ব্যায়াম করার ফলে হার্ট এবং ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তবে ব্যায়াম সঠিক নিয়মে করতে হবে তো জেনে নিন ব্যায়াম করার সঠিক নিয়ম। 

ব্যায়ামের সঠিক নিয়ম 

  • হালকা কিছু খাবার খাওয়া 

ব্যায়াম করার আগে আপনাকে সর্বপ্রথম হালকা কিছু খাবার গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে আপনি ব্যায়াম করার সময় দুর্বলতা অনুভব করবেন। এজন্য ব্যায়াম করার পূর্বে হালকা কিছু  খাবার খেতে হয়। যা ব্যায়াম করার সময় আপনাকে শক্তি প্রদান করবে।

  • শরীর গরম করুন 

ব্যায়াম করার শুরুতে প্রথমে শরীর গরম করে নিতে হয়। তাছাড়া আপনি যখন ভারী কোন কিছু উত্তোলন করবেন আপনার পিসিতে টান পড়তে পারে। তবে যদি গা গরম করে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে নেন তখন আর তেমন একটা সমস্যা হয় না। এজন্য হালকা করে এক মিনিট একটু লাফানো অথবা দড়ি খেলতে পারেন। 

  • নির্দিষ্ট সময়ে ব্যায়াম 

আপনি দিনের যে সময়টা ব্যায়াম করবেন বলে ঠিক করেছেন প্রত্যেক দিন একই সময়ে আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে এটি আপনার শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী এবং শরীরের গ্রোথ ভালো হবে।

  • ধীরে ধীরে ব্যায়াম করা 

ব্যায়াম করার সময় কোনোভাবেই তাড়াহুড়া করা যাবে না। আপনাকে ধৈর্য ধরে আস্তে আস্তে ব্যায়াম করতে হবে এবং ধীরে ধীরে তার পরিমাণ বাড়াতে হবে। 

  • সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম করা 

আপনি যে কোন কাজই করেন না কেন কাজের পদ্ধতি যদি ভুল হয় তাহলে সেটার উন্নতির চেয়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আর ব্যায়ামের ক্ষেত্রে ভুল হলে আপনার বেশি অথবা হাড়ের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে এজন্য ব্যায়াম করার সময় আপনাকে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে জেনে বুঝে ব্যায়াম করতে হবে। 

সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম করলে আপনার শরীর অবশ্যই সুস্থ থাকবে। ব্যায়াম করার ফলে মানুষের আত্মবিশ্বাস এবং হরমোন বেড়ে যায়। তো সঠিক নিয়মে নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। এবং ব্যায়াম করার সময় একটু বিশ্রাম নিবেন। এবং প্রচুর পরিমাণে পানি খাবেন। 

শরীর সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম 

ঘুম আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা যতই খাওয়া দাওয়া করি না কেন আমরা যদি সঠিক পরিমাণ ঘুম নিশ্চিত না করি। আমাদের শরীরকে যদি আমরা আরাম না দিই তাহলে আমরা খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়বো। আমরা যা খাই খাবারগুলো ঘুমের সময় আমাদের শরীরের নানা শরীরবৃত্তিও কাজকর্ম করে থাকে। এবং আমরা ঘুম থেকে ওঠার পর প্রশান্তি এবং ফ্রেশ অনুভব করি। ঘুমের ফলে আমাদের ক্লান্তি দূর হয় এবং ক্ষয় পূরণ সাধিত হয়ে থাকে।  

শরীরকে সুস্থ রাখার উপায়

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে আমরা কয়েক দিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি এজন্য আমাদের শরীরকে ঠিক রাখতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে এবং আমাদের শরীরকে বিশ্রাম দিতে হবে। তো চলুন ঘুম নিয়ে আরেকটু আলোচনা করা যাক। এবং কি পরিমান ঘুম পাড়া উচিত ঘুমের সঠিক গাইডলাইন। 

বয়স অনুযায়ী ঘুমের পরিমাণ 

বয়স ভেদে ঘুমের পরিমাণ কম বেশি হয়ে থাকে। যা একটা মানুষের নিয়মিত বই শোনা যায় ওই পরিমাণ ঘুম নিশ্চিত করা দরকার। 

নবজাতক (০-৩ মাস): ১৪-১৭ ঘণ্টা

শিশু (৪-১১ মাস): ১২-১৫ ঘণ্টা

কিশোর (৬-১৩ বছর): ৯-১১ ঘণ্টা

তরুণ (১৪-১৭ বছর): ৮-১০ ঘণ্টা

প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৬৪ বছর): ৭-৯ ঘণ্টা

বৃদ্ধ (৬৫ বছর বা তার বেশি): ৭-৮ ঘণ্টা

এখন আপনার বয়স অনুযায়ী সঠিক পরিমাণ ঘুম নিশ্চিত করুন। 

সুস্থ গভীর ঘুমের জন্য করণীয় 

  • নিয়মিত ঘুমানোর সময় ঠিক করুন 

প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটা মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে খুবই সহায়ক। এজন্য চেষ্টা করুন একই সময়ে ঘুমাতে যেতে এবং ঘুম থেকে ওঠার।

  • আরামদায়ক ঘুমের পরিবেশ 

গভীর ঘুমের জন্য ঘরটি অন্ধকার হতে হবে, ঠান্ডা এবং নীরব থাকতে হবে। পাশাপাশি বিছানা আরামদায়ক এবং নরম বালিশ ব্যবহার করতে হবে। কোনভাবেই ঘরে আলো জ্বালিয়ে ঘুমানো উচিত হবে না। 

  • ইলেকট্রিক ডিভাইস এড়িয়ে চলা 

ঘুমানোর আগে অবশ্যই মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। টেলিভিশন মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে আপনার ঘুম গভীর হবে না। এজন্য যখন ঘুমাতে যাবেন তার এক ঘণ্টা আগে ইলেকট্রিক ডিভাইস গুলো বন্ধ করে। একটু ভালো বই পড়তে পারেন। তারপর ঘুমিয়ে যান। 

ইলেকট্রিক ডিভাইস ব্যবহার না করে ঘুমানোর আগে হালকা ধ্যান, ভালো বই পড়া পাশাপাশি আপনি ধর্মীয় তিলাওয়াত শুনতে পারেন। এটা আমাদের মনকে অনেক প্রশান্তি দান করে এবং ঘুমটা অনেক গভীর হয়ে থাকে।

  • খাবার ও পানীয় নিয়ন্ত্রণ 

কিছু কিছু খাবার ও পানীয় রয়েছে যা আপনার ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে এবং শরীরের ক্ষতি করে থাকে। এসব খাবার পানীয় থেকে বিরত থাকতে হবে যেমন চা, কফি বা অ্যালকোহল আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি করে থাকে। এবং ঘুমানোর আগে বেশি পানি পান করবেন না যাতে বারবার বাথরুমে যেতে না হয়। 

  • প্রাকৃতিক রুটিন 

সৃষ্টিকর্তার দিন এবং রাত সৃষ্টির পিছনে কোন কারণ অবশ্যই রয়েছে। কারন আমাদের শরীরের জন্য সূর্যের আলো যেমন প্রয়োজন তেমনি রাতের অন্ধকার। এজন্য রাতে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করুন এবং সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সূর্যের আলোতে সময় কাটান। 

  • মানসিক চাপ 

মানসিক চাপ থাকলে ঘুমের সমস্যা হয় এবং রাতে ঘুম হয় না। এজন্য কোন বিষয়ে চিন্তা হলে পার্টনারের সাথে শেয়ার করুন। পাশাপাশি ধর্মীয় বই পড়ুন।

শারীরিক সুস্থতায় খেলাধুলা 

খেলাধুলা শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেলাধুলা ব্যায়ামের মতনই কার্যকরী পদ্ধতি। খেলাধুলা করার ফলে আমাদের শারীরিক মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে। এটি আমাদের শরীরকে শক্তিশালী করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক প্রশান্তি আনে যার ফলে নিয়মিত খেলাধুলা করলে সেই মানুষের শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং হায়াত বৃদ্ধি পায়। কারণ খেলাধুলা মানুষের মনকে শান্তি দান করে আর শান্তিতে থাকলে মানুষের হায়াত এমনিতেই বেড়ে যায়। 

খেলাধুলার উপকারিতা 

খেলাধুলা ব্যায়ামের মতনই আমাদের শারীরিক ফিটনেস উন্নতি করে। এটি শরীরের প্রতিটি পেশী এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সক্রিয় রাখে। এটি শরীরের শারীরিক শক্তি সহনশীলতা বৃদ্ধি করে। খেলাধুলার মাধ্যমে আমাদের হৃদযন্ত্রের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যা হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। খেলাধুলা উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের নানা পোকার ঝুঁকি কমায় পাশাপাশি আমাদের ফুসফুস কে ভালো রাখে। এবং খেলাধুলা করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, হাড় ও বেশি মজবুত হয়। 

এজন্য পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে অবসর সময়ে এবং যারা প্রফেশনে আছেন তারা তাদের কাজের ফাঁকে ফাঁকে অবশ্যই খেলাধুলা করতে হবে। তাহলে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য এবং শারীরিক একাগ্রতা বৃদ্ধি পাবে। এজন্য অবসর সময়ে ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল খেলার চেষ্টা করুন।

শরীরকে সুস্থ রাখতে মানসিক চাপমুক্ত থাকুন 

বর্তমানে আমরা সফলতা পাওয়ার পেছনে ছুটতে ছুটতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। আর এই ব্যস্ত জীবনে আমাদের নানা মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়ে থাকে। তবে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপের ফলে আমাদের মনের শান্তি নষ্ট হয় পাশাপাশি এটি আমাদের শারীরিক সমস্যা যেমন উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ এবং ঘুম না হওয়ার মতন আরো শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এখান থেকে আমাদের আরো নতুন নতুন রোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। এজন্য সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের জন্য মানসিক চাপমুক্ত থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

মানসিক চাপমুক্ত থাকার উপায় 

  • সময় ব্যবস্থাপনা 

মানসিক চাপের সবচেয়ে বড় একটা কারণ হচ্ছে সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা না জানা এবং সময় ব্যবস্থাপনা না করতে পারা। যারা সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করে কাজ সম্পন্ন করতে পারেনা তাদের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়ে থাকে বেশি। এজন্য আপনাকে সময় ব্যবস্থাপনা শিখে প্রয়োজনে কাজের ছোট ছোট অংশ এ ভাগ করে কাজ সম্পন্ন করা। এবং অবাঞ্ছিত কারণে সময় নষ্ট না করা। 

  • নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করুন 

যোগ ব্যায়াম বা মেডিটেশন আমাদের মানসিক প্রশান্তি এবং ব্রেনকে শান্ত করতে খুবই কার্যকরী একটি পদ্ধতি। এজন্য নিয়মিত অন্তত 20 থেকে 30 মিনিট যোগ ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। এটি মানসিক প্রশান্তি দান করে এবং ব্রেন কে শক্তিশালী করে। 

  • শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম 

অনেক সময় আমাদের ব্রেনে অক্সিজেনের অভাবে সঠিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকে। আর অতিরিক্ত ব্যস্ততার ফলে আমাদের ব্রেনে নানা ধরনের চাপ পড়ে যায়। এজন্য নিয়মিত গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম আপনার ব্রেনে অক্সিজেনের সঠিক সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান পৌঁছে দেয়। এজন্য মেডিটেশনের পাশাপাশি গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। 

  • পারিবারিক এবং সামাজিক সুসম্পর্ক 

আপনার পরিবারের সবার সাথে ভালো আচরণ করা এটা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এজন্য চেষ্টা করুন কারো সাথে রাগারাগি না করার জন্য এবং সবার সাথে ভালো আচরণ করুন। পাশাপাশি আপনার সমাজের সকলের সাথে যোগাযোগ রাখুন কথাবার্তা বলুন এবং সবার খোঁজ খবর নিন। সবার সাথে সুন্দর কথাবার্তার কারনে আমাদের মনের প্রশান্তি অনুভব হয় যা মানসিক সুস্থতা বজায় রাখে। 

  • শখ এবং আগ্রহের কাজ করুন 

প্রতিটা মানুষের কোনো না কোনো শখের জিনিস থাকে। সেটা কোন কাজ হতে পারে অথবা কোন খেলাধুলাও হতে পারে সেটা। আপনি যদি মানসিক প্রশান্তি অর্জন করতে চান তাহলে আপনার প্রফেশনের পাশাপাশি আপনার প্যাশান বা সক নিয়েও আপনাকে কাজ করতে হবে। তাহলেই আপনি একজন সফল মানুষ হিসেবে নিজের মনের প্রশান্তি অনুভব করবেন। 

  • ভালো বই পড়ুন ইতিবাচক চিন্তা করুন 

আমরা যা চিন্তা করি তার বেশিরভাগই আমাদের ব্রেনে সেভ থাকে। এজন্য আমাদের অবশ্যই ভালো বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। এবং প্রতিনিয়ত আমাদের ভালো চিন্তা করা ভালো কাজের বিষয়ে গবেষণা করা। এগুলো আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। 

  • অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার 

আমাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রযুক্তি খুবই ক্ষতি করে একটা বিষয়। তবে বর্তমান এই আধুনিক যুগে আমরা প্রযুক্তি ছাড়া চলতেও পারবো না। এজন্য আপনার যতটুক প্রয়োজন বা প্রয়োজনের অতিরিক্ত টেকনোলজি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। প্রয়োজন ছাড়া অযথা মোবাইল এবং টেলিভিশনের সময় কাটানোর দরকার নেই। 

শরীরকে সুস্থ রাখতে কিছু এড়িয়ে চলা 

শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় হিসেবে অনেক ভালো অভ্যাস তৈরি করার পাশাপাশি আমাদের কিছু বাজে খাবার-দাবার এবং বাজে বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে হবে। যে বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজন। এবং এগুলো এড়িয়ে না চললে আমাদের শরীর অনেক ক্ষতি করে ফেলে। 

অস্বাস্থ্যকর খাবার 

শরীরকে সুস্থ রাখতে অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ খাবার আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী তবে এটা যদি কৃত্রিম কোন কেমিক্যাল বা বাজে উপাদান দিয়ে তৈরি হয় তা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য আমাদের ফাস্টফুড ও প্রক্রিয়াজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। পাশাপাশি চিনি জাতীয় খাবার এবং অতিরিক্ত তেল চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ অতিরিক্ত তেল চর্বিযুক্ত খাবার আমাদের শরীরে কোরিস্টেরল বাড়িয়ে দেয় যার হৃদ রোগের বড় ক্ষতি করে। 

ধূমপান, মদ্যপান ও তামাক 

এই ধরনের অভ্যাস আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় ক্ষতি সাধন করে থাকে। নিয়মিত ধূমপানের ফলে ফুসফুসে ক্যান্সার হৃদরোগ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ ধরনের পণ্য আমাদের মুখ, ফুসফুসে ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পাশাপাশি মদ্যপান আমাদের লিভার কিডনি মস্তিষ্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মদ্যপানের ফলে আমাদের মস্তিষ্কের নানা ধরনের ক্ষতি সাধন হয়ে থাকে। এটি লিভার এবং কিডনি ড্যামেজেরও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমানে মদ্যপানের কারণে প্রচুর মানুষ লিভার নষ্ট হয়ে মারা যায়। 

অনিয়মিত খাদ্য অভ্যাস 

খাদ্য আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা খাদ্য খেয়ে বেঁচে থাকি খাদ্য ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত বাঁচতে পারব না। এবং সুষম খাদ্য গ্রহণের ফলে আমরা সুস্থ থাকি। তবে আমরা যদি সময় মত খাবার না গ্রহণ করি। তাহলে আমাদের শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। গ্যাস থেকে শুরু করে শারীরিক দুর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য চেষ্টা করবেন সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করার জন্য।

অপ্রয়োজনীয় ঔষধ খাওয়া 

এটা বর্তমানে মানুষের অভ্যাস হয়ে গেছে যে প্রয়োজন অপ্রয়োজনেই আমরা কোন না কোন ওষুধ খেয়ে ফেলি। আগের মানুষ ওষুধ খেতে চাইত না। আর বর্তমানে আমরা ওষুধ ছাড়া একদিনও থাকতে পারিনা। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া আমাদের লিভার ও কিডনির উপর খুবই বাজে প্রভাব ফেলতে পারে এবং এগুলো নষ্ট কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এজন্য বিশেষ করে ব্যাথা নাশক এবং অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। 

হস্তমৈথুন বা জেনা ব্যভিচার 

যৌবনের তাড়নায় অল্প বয়সে হস্তমৈথুন এবং জেনা ব্যভিচার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বেশি মারাত্মক ক্ষতির কারণ। এই ধরনের কাজের ফলে আমাদের শরীর থেকে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান নির্গত হয়। যা আমাদের শরীরের প্রয়োজন। এবং এ ধরনের কাজের ফলে আমাদের মন মানসিকতা ও নষ্ট হয়ে যায়। আমরা ভালো কাজে ফোকাস করতে পারি না এবং দীর্ঘ সময় ধরে ভালো কোন কাজ করতে পারি না।

আমার শেষ কথা 

শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় হিসেবে আমাদের অনেক কিছু মেনে সুন্দর জীবন যাপনের অভ্যাস গঠন করতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ ব্যায়াম এবং ইতিবাচক চিন্তা এবং ভালো কাজকর্মে অংশগ্রহণের পাশাপাশি আমরা শরীরকে সুস্থ রাখতে পারব। 

আমাদের শরীর যেহেতু সবচেয়ে বড় সম্পদের মধ্যে একটা। এজন্য আমাদের শরীরের যত্ন নিতে হবে যাতে শরীর অনেকদিন ধরে আমাদেরকে ভালো আউটপুট দিতে পারে। শরীর ভালো রাখার বিষয় এই পোস্টে অনেক সুন্দর করে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনারা এ বিষয়গুলো মেনে চললে অবশ্যই আপনার শরীর ভালো থাকবে। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করুন তাহলেই আপনার শরীর দীর্ঘদিন সুস্থ থাকবে এবং আপনার জীবন সুন্দর হবে।

পোস্টটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

আগের পোস্ট পড়ুন পরের পোস্ট পড়ুন
এখনো কেউ কমেন্ট করে নি
কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন

comment url